Unordered List

Definition List

রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ, বিদায়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত

 

রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ, বিদায়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত


২৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। রাজধানী ঢাকার বঙ্গভবনের সামনে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্যরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং এক পর্যায়ে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। পুলিশ তাদের থামাতে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীরা শেষমেশ স্থান ত্যাগ করেন। এই ঘটনার পর রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের প্রশ্নটি এখন তীব্র আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

https://decorationmercifulmonth.com/fee24yg1?key=62e19a37066a631873deb8324b42eae6


রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি

বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবি ছিল রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ। তাঁরা অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি বলে রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক মন্তব্য সরকার ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস, রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্য নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ও বিভিন্ন সংগঠন বঙ্গভবন অভিমুখে পদযাত্রা করে এবং ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

রাজধানী ও অন্যান্য এলাকায় বিক্ষোভ

বিক্ষোভের ঢেউ শুধু রাজধানীতে সীমাবদ্ধ থাকেনি; চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের অন্যান্য বড় শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সরকার পতনের পর থেকে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা সন্দেহজনক হয়ে উঠেছে এবং রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ছাড়া তাদের দাবি পূরণ হবে না।

আইনি ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র না পাওয়ার রাষ্ট্রপতির দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এটি শপথ ভঙ্গের শামিল। তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতির এমন মন্তব্য সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার পরিপন্থী। সরকারের অন্য উপদেষ্টারা এই বক্তব্যের সাথে একমত হয়েছেন এবং তাঁরা বিশ্বাস করেন, রাষ্ট্রপতির নিজেই পদত্যাগ করা উচিত। তবে, সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

সরকারের একাধিক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, উপদেষ্টা পরিষদে রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে অনেকবার আলোচনা হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে একটি চাপ সৃষ্টি করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এখনো নিশ্চিত নয়। এদিকে, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা পরিষ্কার নয়, কারণ সংসদ না থাকায় সাংবিধানিক নিয়মে রাষ্ট্রপতিকে সরানোর প্রক্রিয়া জটিল হতে পারে।

বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়া

বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে এবং বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীও হস্তক্ষেপ করে। বঙ্গভবনের আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পাহারা জারি করা হয়।

সরকারের কিছু উপদেষ্টা মনে করেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে ছাত্র আন্দোলন এবং বিভিন্ন মহল থেকে ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে রাষ্ট্রপতির বিদায়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে গেছে। যদিও সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং তার ভিত্তিতে সরকার অবস্থান পরিষ্কার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতির সম্ভাবনা

বিক্ষোভের তীব্রতা এবং সরকারের উপদেষ্টাদের মন্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এখন সময়ের ব্যাপার। যদি রাষ্ট্রপতি নিজ থেকে পদত্যাগ না করেন, তবে সরকার হয়তো তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

সরকারের একজন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এখন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই, যেখানে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা হবে এবং সেখান থেকে ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নির্ধারণ হবে।

এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বেশ উত্তপ্ত এবং রাষ্ট্রপতির ভবিষ্যৎ অবস্থান কী হবে তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।

No comments:

Powered by Blogger.