রাতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মৃদু ভূমিকম্প
গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একটি মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পটি রিখটার স্কেলে ৪.১ মাত্রার ছিল এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল শরীয়তপুর জেলার জাজিরা, যা রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
ভূমিকম্পটি দিবাগত রাত ১২ টা ৪৩ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে ঘটে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, এই ভূমিকম্প মূলত শরীয়তপুর এবং এর আশপাশের কয়েকটি জেলায় অনুভূত হয়। যদিও ভূমিকম্পটি মৃদু ছিল, তবুও মানুষজন বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। প্রাথমিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে স্থানীয় অধিবাসীরা ভূমিকম্পের তীব্রতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন আহমেদ জানান, শরীয়তপুরের আশপাশে অনেকেই ভূমিকম্পটি অনুভব করেছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝেমধ্যে ভূমিকম্প হওয়ার একটি সাধারণ প্রবণতা রয়েছে, বিশেষ করে যেসব এলাকা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত।
এ ধরনের ভূমিকম্পের সময় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে, তখন আকস্মিক কম্পন অনুভব করলে তাদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। তবে মৃদু ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে, যা এক ধরণের স্বস্তির বিষয়।
ভূমিকম্প নিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, এই ধরনের ভূমিকম্প স্থানীয় টেকটনিক প্লেটের মৃদু পরিবর্তনের কারণে ঘটে থাকে। বাংলাদেশের ভূ-ভাগ টেকটনিক প্লেটের সংযোগস্থলের কাছাকাছি অবস্থান করায় মাঝেমধ্যে ছোটোখাটো ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে বড় আকারের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও এ ধরনের ছোট ভূমিকম্প কোনো বড় ক্ষতি করে না।
ভূমিকম্পের সময় কিছু নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। ভূমিকম্পের সময় মানুষকে খোলা জায়গায় আশ্রয় নেওয়া, ভবনের নিচে না দাঁড়ানো এবং শক্তপোক্ত আসবাবের নিচে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে ভবনগুলোতে ভূমিকম্প প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশে ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। তারা মানুষকে ভূমিকম্পের সময় কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়, সে সম্পর্কে শিক্ষা দিচ্ছে। এ ধরনের সচেতনতা প্রচারণা দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি, কারণ বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হতে পারে।
শেষে বলা যায়, বাংলাদেশে ভূমিকম্পের প্রকোপ থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়, তবে সঠিক প্রস্তুতি এবং সচেতনতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব।
No comments: