Unordered List

Definition List

রাজনীতি নিয়েও রূপরেখা দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

 

রাজনীতি নিয়েও রূপরেখা দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন


আজকের সংবাদ সম্মেলনটি ঢাকার শাহবাগ থানা চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত সমন্বয়করা ঘোষণা করেন যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে অতি দ্রুত একটি রাজনৈতিক রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। এই রূপরেখায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হবে, যার মধ্যে রয়েছে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধকরণ, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, এবং নতুন সংবিধান রচনা। তাদের মতে, বর্তমান সংবিধানের অবসান ঘটিয়ে নতুন সংবিধান রচনা করলেই বিপ্লব পূর্ণাঙ্গ হবে।

https://decorationmercifulmonth.com/jmb6krjp?key=7155045e5f40b3afa56d58d7faca078a


ছাত্রলীগের নিষিদ্ধকরণের দাবি

সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ এই সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, ছাত্রলীগের নেতারা একেকজন সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি। তারা দাবি করেন, বাংলাদেশে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে "রেড অ্যালার্ট" জারি করতে হবে এবং তাদের সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এছাড়া, আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর রাজনীতিও নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়। বিশেষ করে যারা গণহত্যায় জড়িত ছিল, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

মামলা এবং এর প্রেক্ষাপট

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রসঙ্গে একটি মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৯১ জনের নাম উল্লেখ করে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করা হয়েছে। এর সাথে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮০০ থেকে ১০০০ জন আসামির নাম রয়েছে। মামলার বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার জানান, শেখ হাসিনা ১ নম্বর আসামি। এছাড়া, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের নামও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বিচার এবং প্রতিরোধের আহ্বান

মাহিন সরকার সারা দেশের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে তথ্য-প্রমাণসহ মামলা দায়ের করতে হবে। যারা এই হামলার শিকার হয়েছে, তারা যেন তাদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। তার মতে, বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশে এই কুলাঙ্গার, হামলাকারী ও হত্যাকারীদের জেলহাজতে স্থান হবে, মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার অধিকার তাদের থাকবে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান

সংবাদ সম্মেলনে আরেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, সরকারের উচিত ছাত্রলীগকে দ্রুত নিষিদ্ধ করা। তিনি উল্লেখ করেন যে, ছাত্রলীগ ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর দমনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল এবং শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। ছাত্রলীগকে ফ্যাসিবাদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এত রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্রলীগের মতো একটি সন্ত্রাসী সংগঠন থাকতে পারে না।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মামলা প্রক্রিয়া সারা দেশে চলমান থাকবে। দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। আন্দোলনের নেতারা মনে করেন, এটি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনা নয়; সারাদেশে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।

মশাল মিছিল

সংবাদ সম্মেলন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একটি মশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলে "মুজিববাদ মুর্দাবাদ", "ইনকিলাব জিন্দাবাদ", "ছাত্রলীগের দিন শেষ" ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্বদানকারী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্রলীগের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়েছে ১৫ জুলাই এবং আওয়ামী লীগের কবর রচিত হয়েছে ৫ আগস্ট।

ছাত্রলীগের অতীত কর্মকাণ্ড

উমামা ফাতেমা নামের আরেক সমন্বয়ক ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ড ছাত্রলীগকে আর ছাত্রসংগঠন হিসেবে বৈধতা দেয় না। ছাত্রলীগের ত্রাসের রাজত্ব শেষ করার জন্য সরকারের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সমাপ্তি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয় যে, তারা একটি নতুন রাজনৈতিক রূপরেখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

No comments:

Powered by Blogger.